নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা শহরের নতুন মাথাভাঙ্গা সেতুর উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভার্চ্যুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ সেতুটির উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে সেতু প্রান্তেও এক উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাবির্ক) সাজিয়া আফরিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস, কুষ্টিয়া সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাসুদ করিম, জেলা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. শামসুজ্জোহা, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জহুরুল কনস্ট্রাকশনের সত্ত্বাধিকারী জহুরুল ইসলাম প্রমুখ।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। উন্নয়নমূলক কাজগুলোর অগ্রগতি যেন আরও ভালো হয়, সেদিকে সংশ্লিষ্ট সকলকে খেয়াল রাখতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার বিষয়েও লক্ষ্য রাখতে হবে। মন্ত্রী বলেন, ওই অঞ্চলে খুলনা-যশোর মহাসড়কটি কেন ভালো থাকে না, তার কারণটা উদ্ঘাটন করা প্রয়োজন। মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে, আমার কাছে অনেক অভিযোগ আসছে। এই সমস্যাটির সমাধান করতে হবে।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেও আরও বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমাদের বাসের ভাড়া বৃদ্ধি করতে হয়েছে। তবে এর থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে না। আমাদের বাস মালিকরা কথা দিয়েছেন, কিন্তু তাঁরা যদি কথা না রাখেন, আমাদেরও কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। যৌথ অভিযানের মাধ্যমে কিছুটা সফলতা আসছে, তারপরও ঢাকা-চট্টগ্রাম সিটিতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ আসছে। তাছাড়া, যাত্রীর সাথে যে সকল ড্রাইভার-হেলপার খারাপ আচরণ করে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দেও প্রতি অনুরোধ করছি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। সেতুটির নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ১৪০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২.২৫ মিটার প্রস্থের এ সেতুটির কাজ শেষ হতে সময় লেগেছে ২ বছর। পুরোনো সেতুর পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে নতুন এই সেতু। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে প্রায় মাস খানেক ধরে যানবাহন চলাচল করা শুরু করে। শুধু ছিল উদ্বোধনের অপেক্ষায়। গতকাল সেতুটি উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে যান চলাচল শুরু হলো।
চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর জেলার একমাত্র সংযোগ সেতু মাথাভাঙ্গা। ২০১৫ সালে পুরোনো মাথাভাঙ্গা সেতুর মাঝখানে ভাঙন দেখা দেয়। এরপর থেকেই ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্থানীয় সড়ক বিভাগ। এরপর ২০১৯ সালের ১১ জুন আবারও ফাটল দেখা দেয় সেতুতে। এতে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ৪ মাস ধরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে সেটা মেরামত শেষে হালকা যানবাহন চলাচল শুরু হয়।