নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি মেহেরপুর ইউনিটের ওয়ার হাউজ থেকে বিভিন্ন মালামাল জব্দ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা। সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা মালামালগুলো জব্দ করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সকালে মেহেরপুর রেড ক্রিসেন্টে চলছে পরিবারতন্ত্র শিরোনামে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। যেটি আমার নজরে আসলে আমি মেহেরপুর জেলার আহবায়ক হিসেবে রেড ক্রিসেন্ট অফিসে আসি। এখানে যে ইউএলও আছেন তার কাছে জানতে চাই রেড ক্রিসেন্ট ওয়ার হাউজে বিভিন্ন মালামাল আছে যে বিতরণ না কেও রেখে দেওয়া হয়েছে। তখন আমি ইউএলওকে ওয়ার হাউজ খুলে দিতে বললে তিনি বলেন ওয়ার হাউজের চাবি হারিয়ে গেছে। তখন আমি নতুন তালা দেওয়ার কথা বলে তালা ভেঙ্গে ভিতরে দেখি ২০২১ সালের করোনার সময় যখন মানুষ অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মারা গেছে সেই অক্সিজেন মেশিন পড়ে আছে যা এখনও পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়নি। এখানে অক্সিজেন ক্যারিয়ার ৫টি থাকলেও সিলিন্ডার আছে ২টা। এটার হিসাবও তাদের কাছে নেই। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ছোট—বড় হ্যাক্সিজল আছে । যেগুলো পড়ে মেয়াদ শেষ হয়েছে তারপরও সেগুলো মানুষদের দেওয়া হয়নি। এছাড়াও ছাতা, পানি, গত বছরের শীতের কম্বল, ক্যাপ, মাস্ক, সদস্যদের পোশাক পড়ে আছে। আমার জেনেছি এই ওয়ার হাউজ সম্পর্কে সদস্যরা জানতে চাইলে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়। এজন্য তারা এই সম্পর্কে কিছুই জানতে পারে না। গরমকালে যে পানি মানুষের মাঝে বিতরণ করার কথা সেই পানি গত ৫ তারিখের পর অতিগোপনে বিতরণ করেছে। এই পানি বিতরণের সময় যারা অংশগ্রহণ করেছিল সেই ভলিন্টিয়ারদের জনপ্রতি ৫’শ টাকা করে সম্মানি দেওয়ার কথা থাকলেও যেখানে তাদের স্বাক্ষর করে নিয়ে ১’শ টাকা করে দেওয়া হয়েছে কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাকী ৪’শ টাকার কোন হিসার কাউকে দেওয়া হয়নি। এডিসি জেনারেল স্যারের তত্বাবধানে এবং ছাত্র প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে প্রচুর পরিমাণ মালামাল বের করা হয়েছে। মালামালের প্রতিটি হিসাব আমরা এডিসি জেনারেল স্যারের কাছে বুঝিয়ে দেবো।
উল্লেখ্য, পরিবারতন্ত্রে চলছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি মেহেরপুর ইউনিট। একই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিগত ১৫ বছর ধরে চলমান এই কমিটি জড়িয়েছে নানা অনিয়মে। অনিয়মকে নিয়ম বানিয়ে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি মেহেরপুর ইউনিট নিজের দখলে রাখতে বিগত দিনে গোপনে ইউথ কমিটি, বিভিন্ন সময়ের অনুদান ও অর্থ আত্মসাৎ, বিতরণকৃত মালামাল গোডাউনজাত, ইউডিআরটি মেম্বারদের সরঞ্জাম ও অর্থ আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে আর সি ওয়াই মেম্বারদের বাদ দিয়ে নিজ নিকটীয় আত্মীদের অংশগ্রহণ করানো সহ নানা অভিযোগ রয়েছে এই কমিটির সাবেক যুব প্রধান ও বর্তমান মনোনীত এক্সিকিউটিভ সদস্য খন্দকার সামসুজ্জোহা সোহাগের বিরুদ্ধে।