নিজস্ব প্রতিবেদক:
ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্বপন নামের এক জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২ লক্ষ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরের দিকে মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্বাচন দমন ট্রাইবুনাল মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মোঃ তহিদুল ইসলাম এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত স্বপন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের এনামুল হকের ছেলে।
মামলার বিবরনে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর গাংনী উপজেলা মোহাম্মদপুর গ্রামের স্বপন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রাজপুর রাজনগর গ্রামের রাহাতুল ফকিরের ১৫ বছর বয়সী মেয়ের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয। এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টার দিকে মোবাইল ফোনে তাকে ডেকে নেয়। পরে তাকে নিয়ে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করার পর রাত ১১:৩০ টার দিকে গাংনীর আকবপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের নির্মাণাধীন দ্বিতল ভবনের ছাদে নিয়ে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যাই। পরদিন সকালে ভিকটিম এলাকা থেকে বেরিয়ে এসে বিষয়টি তার পিতা সহ এলাকাবাসীকে অবহিত করে। পরে ভিকটিমের পিতা রাহাতুল ইসলাম ফকির বাদী হয়ে স্বপন এবং সাহারুলের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ এর ৯ (১) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নারী ও শিশু মামলা নং ১১২/২০১৯। পরে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী উপজেলার কুমারিডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মিন্টু মিয়া আসামী স্বপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন। মামলায় মোট ৮ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন।
সাক্ষীদের সাক্ষে আসামী স্বপন দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২ লক্ষ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।
মামলার রায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১৫ বিধান অনুযায়ী আসামি মোঃ স্বপন আলীর প্রতি আরোপিত অর্থদণ্ড ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য হবে। উক্ত ক্ষতিপূরনের টাকা আসামী স্বপন আলী বর্তমান সম্পদ হতে আদায় করা সম্ভব না হলে তিনি ভবিষ্যতে যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হবেন সে সম্পদ হতে তা আদায়যোগ্য হবে। এবং এক্ষেত্রে উক্ত সম্পদের উপর অন্যান্য দাবি উপেক্ষা করে ক্ষতিপূরণের দাবী প্রাধান্য পাবে। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইসরাত জাহান তমা। এবং আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আতাউল হক আনটু কৌশলী ছিলেন।