Home » মেহেরপুরে বাল্যবিবাহের আসরে ইউএনও’র হানাঃ বর কারাগারে, ভগ্নিপতির জরিমান।

মেহেরপুরে বাল্যবিবাহের আসরে ইউএনও’র হানাঃ বর কারাগারে, ভগ্নিপতির জরিমান।

কর্তৃক ajkermeherpur
260 ভিউজ

আমঝুপি অফিস:

প্রতিনিধি: তয়ন সাহা

শতাধিক বরযাত্রী, মাংস-ভাতের আয়োজন আর আপ্যায়নের তোড়জোড়-সব প্রস্তুত। বাকি শুধু কাবিননামায় স্বাক্ষর। এমন মুহূর্তে উপস্থিত হয়ে সপ্তম শ্রেণির এক কিশোরীর বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেন মেহেরপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ খায়রুল ইসলাম।

ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে, সদর উপজেলার মদনা ডাঙ্গা গ্রামে। মাত্র ১৪ বছর বয়সী ওই মেয়েটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাকে বিয়ের জন্য পাত্র হিসেবে আনা হয়েছিল একই উপজেলার খোকসা গ্রামের রাহিদুল শেখের ছেলে রাবিব রাসেল (১৮)-কে। অথচ বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ অনুযায়ী, ছেলের ন্যূনতম বয়স হতে হয় ২১ বছর, আর মেয়ের ১৮ বছর না হলে বিয়ে করা অবৈধ।

গোপন সূত্রে তথ্য পেয়ে ছদ্মবেশে কনের বাড়িতে উপস্থিত হন ইউএনও খায়রুল ইসলাম। ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি বিয়ের পূর্ণ প্রস্তুতি দেখতে পান। কিছু বরযাত্রী বাড়িতে, বাকিরা ছিলেন মসজিদে জুমার নামাজে। পরিকল্পনা ছিল নামাজের সময়েই হঠাৎ করেই বিয়ে সম্পন্ন করে ফেলা। তবে প্রশাসনের উপস্থিতিতে সে পরিকল্পনায় পানি পড়ে যায়।

ইউএনও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার প্রতিনিধি, সমাজসেবা কর্মকর্তা, পুলিশ এবং ব্যাটালিয়ন আ সদস্যদের। পরে ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমাণ আদালত ব বর রাবিব রাসেলকে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘনের দায়ে সাত দিনের বিনাশ্রমকারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। এ ছাড়া বিয়ের অন্যতম উদ্যোক্তা হিসেবে উপস্থিত রাবিবর ভগ্নিপতি সজিব আলী (আমঝুপি) কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ সময় কনের মা-বাবাকে সতর্ক করে লিখিত মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত যেন কোনোভাবেই পুনরায় বিয়ের আয়োজন না করা হয়, সে বিষয়ে একজন স্থানীয় শিক্ষককে বিশেষ নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অভিযান শেষে স্থানীয় জনগণকে একত্র করে ইউএনও বাল্যবিবাহের কুফল ও আইনগত পরিণতি সম্পর্কে সচেতন করেন।

মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়েছে। কৌশলে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছিল। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তা বন্ধ করেছি এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, সমাজে সচেতনতা তৈরি করাও জরুরি।’

০ মন্তব্য

You may also like

মতামত দিন