Home » স্ত্রীর শরীরে কয়েলের ছ্যাকা স্বামীর পরকীয়ায় তছনছ সংসার

স্ত্রীর শরীরে কয়েলের ছ্যাকা স্বামীর পরকীয়ায় তছনছ সংসার

কর্তৃক xVS2UqarHx07
342 ভিউজ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি রমজান আলী:

গৃহবধু স্বপ্না খাতুনের শরীরে অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ন। কোয়েলের আগুনের ছ্যাকায় বাম হাতের দগদগে ঘাঁ কেবলই সেরে উঠেছে। তাপরও নির্যাতন থেমে নেই। যৌতুক না দিতে পারা ও স্বামীর পরকীয়ার প্রতিবাদ করে শ্বশুরবাড়ির সেই দুঃসহ জীবন যেন স্বপ্নার বিষিয়ে উঠেছে। স্বামীর নির্যাতনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সুস্থ হয়ে স্বামীর সংসারে ফিরতে চাইলেও রোববার শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, ননদ ও দেবার তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের পল্লী চিকিৎসক বাবুল আক্তারের স্ত্রী স্বপ্না খাতুন (২৩) এ ঘটনায় স্বামীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্বপ্না খাতুন জানান, ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর বাবুলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বাবুল কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের ওমর আলীর ছেলে। ওই দম্পত্তির একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর বাবুলকে নগদ তিন লাখ টাকা ও একটি ডিসকোভার মটরসাইকেলসহ মোট পাঁচ লাখ টাকার জিনিসপত্র দিয়েছেন। এরপরও টাকার জন্য তার উপর নির্যাতন করতো স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।

গত ২৬ আগষ্ট যৌতুকের জন্য স্বামী, শ্বশুর ওমর আলী, শ্বাশুড়ি জামেনা বেগম, দেবর সাগর আলী ও ননদ শামীমা নাসরিন যৌথ ভাবে অকথ্য নির্যাতন করে। নির্যাতনের ফলে স্বপ্না খাতুন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে সন্তানের দিকে তাকিয়ে স্বামীর ঘরে ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাড়িতে জায়গা হয়নি তার। স্বপ্না অভিযোগ করেন, পল্লী চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে তার স্বামী গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা দিয়ে বেড়ান। এই সুযোগে এলাকায় বিদেশ থাকা ব্যক্তিদের স্ত্রীর সঙ্গে তার একাধিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বর্তমান প্রতাপপুর গ্রামের সাথী নামে এক নারীর সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। প্রতিবাদ করায় তার উপর শুধু নির্যাতনই নয়, গর্ভের তিন মাসের সন্তানও ফেলে দিয়েছে পাষন্ড স্বামী বাবুল। গর্ভপাত ঘটাতে ঝিনাইদহ থেকে আয়েশা খাতুন নামে এক প্রবিণ নার্সকে নিয়ে এসে স্বপ্নার পেটের তিন মাসের বাচ্চা নষ্ট করা হয়।

এর প্রমানও তার কাছে রয়েছে। স্বপ্নার পিতা গাড়ামারা গ্রামের সামছুল হক ও ছোট ভাই তৌফিকুর রহমান অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকেই বাবুল আক্তার ও তার পরিবারের সদস্যরা নানা ভাবে মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছে। ন্যায় বিচার পেতে তারা পুলিশের দারস্থ হয়েছেন। বাবুল আক্তারের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বিষয়টি নিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাতলামারি পুলিশ ক্যাম্পের এসআই আনিসুজ্জামান বলেন, ঝিনাইদহ সদর থানা থেকে ওসি সাহেব মামলাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার দুপুরে ভিকটিমের বক্তব্য শোনা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তিনি বলেন অধিকতর তদন্ত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

০ মন্তব্য

You may also like

মতামত দিন