নিজস্ব প্রতিনিধি:
জমে উঠছে আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলা
আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলা-২০২৫ রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররম প্রাঙ্গণে জমে উঠতে শুরু করেছে। মাসব্যাপী এ মেলা চলবে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ছুটির দিনে খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।গত শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন মেলার উদ্বোধন করেন। টানা বৃষ্টির প্রভাবে দর্শনার্থী উপস্থিতিকে প্রভাবিত করলে এখন জমে উঠতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।নূরানী এমদাদীয়া প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘গত বছর যে পরিমাণ লোক এসেছিল, এবার তার এক-চতুর্থাংশও নেই। মেলাটা ফাঁকা মনে হচ্ছে। যদি প্রচার-প্রচারণা বাড়ানো হয় তবে বেচাকেনাও বাড়বে, ব্যবসায়ীদের জন্য ভালো হবে এবং ইসলাম প্রচারের কাজও এগিয়ে যাবে।’
বিক্রেতা মোসলেম বলেন, ‘বেচাকেনা এখনো জমে ওঠেনি। মাত্র তো মেলা শুরু হলো। মিডিয়া যদি বাংলা একাডেমির বইমেলার মতো প্রচারণা চালায়, তাহলে ইসলামি বইমেলার জাকজমকতা অনেক বেড়ে যাবে।’মেলায় আগত ক্রেতা ও দর্শক নাহিয়ান বলেন, ‘এটি একটি ভালো উদ্যোগ। একে বলা যায় ইসলামিক মিলনমেলা। বাচ্চাদের জন্যও সুন্দর সুন্দর বই আছে। তবে লেখকরা নিজেরা এলে পাঠকরা তাদের সাথে দেখা করার সুযোগ পাবেন। এতে বইমেলায় প্রাণ আসবে, মানুষও বেশি আসবে।’
অন্য এক ক্রেতা আল আমিন বলেন, ‘মেলায় প্রায় সব ধরনের ইসলামি বইই পাওয়া যাচ্ছে। জাতীয় মসজিদের প্রাঙ্গণে হওয়ায় নামাজ শেষে অনেকে বইমেলায় আসছেন। তবে যদি বড় আকারে প্রচারণা চালানো হয়, তবে বাইরের আরও অনেক মানুষ আসবেন।’
এবারের বইমেলায় পাকিস্তান, মিশর ও লেবাননের চারটি স্বনামধন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। দেশীয় মিলিয়ে শতাধিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান তাদের নতুন ও জনপ্রিয় বই প্রদর্শন করছে। প্রথমবারের মতো বাইতুল মোকাররমের পূর্ব গেইট থেকে দৈনিক বাংলার মেইন রোড পর্যন্ত স্টল বিস্তৃত হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে শিশুচত্বর, মিডিয়া কর্ণার, মহিলাদের আলাদা বসার স্থান, লিটল ম্যাগাজিন কর্ণার, লেখক কর্ণার, ফুড কর্ণার ও ইনফরমেশন সেন্টার। এছাড়া বিশাল মঞ্চে প্রতিদিন হবে বই মোড়ক উন্মোচন, আলোচনা সভা ও বিভিন্ন আয়োজন।
বাংলাদেশে ইসলামী বইমেলার সূচনা নব্বইয়ের দশকের শেষভাগে। বর্তমানে এটি দেশের সবচেয়ে বড় ইসলামি গ্রন্থমেলায় পরিণত হয়েছে। ইসলামী জ্ঞান, সাহিত্য ও গবেষণার প্রসারে এই মেলা বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।
আয়োজকরা বলছেন, যদি গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রচার-প্রচারণা বাড়ানো যায় তবে ইসলামি বইমেলা আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন সমৃদ্ধ হবে, তেমনি ইসলামী জ্ঞান ও সংস্কৃতির প্রচারও বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।