নিজস্ব প্রতিনিধি:
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় একটি নবজাতক কন্যা শিশুকে বিছানায় রেখে উধাও হয়ে যান তার মা। শিশুটির পাশে পাওয়া একটি বাজারের ব্যাগে ছিল কাপড়, ওষুধ, ডায়াপার এবং একটি চিরকুট, যেখানে মা নিজের পরিচয় ও কষ্টের কথা জানিয়ে গেছেন।
চিরকুটে লেখা ছিল—
“আমি মুসলিম। আমি একজন হতভাগী। পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে বাচ্চা রেখে গেলাম। দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন। বাচ্চার জন্ম তারিখ ৪-১১-২০২৫, রোজ মঙ্গলবার। এগুলো সব বাচ্চার ওষুধ। আমি মুসলমান জাতির মেয়ে।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে শিশুটিকে ভর্তি করান এক পঞ্চাশোর্ধ্ব দম্পতি, যারা নিজেদের শিশুটির নানা-নানি পরিচয় দেন। মাকে আনতে বললে তারা জানান, মা নিচে আছেন—কিন্তু এরপর আর ফিরে আসেননি। পরে ওয়ার্ডের এক বেডে শিশুটিকে একা পড়ে থাকতে দেখা যায়।
কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসক গোলাম আহাদ জানান, নবজাতকটি সময়ের আগেই জন্ম নেওয়ায় তাকে ফটোথেরাপি দেওয়া হয়েছে এবং ওয়ার্মারে রাখা হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ রয়েছে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) খবরটি প্রকাশের পর থেকেই বহু মানুষ শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফজলুর রহমান বলেন,
“নবজাতকটিকে আমরা বিশেষ পর্যবেক্ষণে রেখেছি। প্রথমত শিশুটির প্রকৃত অভিভাবকদের খুঁজে পাওয়া আমাদের প্রধান কাজ। এজন্য পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছি। রেজিস্টারে থাকা ঠিকানা অনুযায়ী অনুসন্ধান চলছে। অভিভাবকদের পাওয়া গেলে তাদের বক্তব্য অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বর্তমানে হাসপাতাল ও পুলিশ যৌথভাবে নবজাতকের মাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে। শিশুটি এখন নিরাপদে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ট্যাগস

