Home » শাহজালালে ভল্ট ভেঙে অ’স্ত্র চুরির অভিযোগ, জিডি করেই দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ!

শাহজালালে ভল্ট ভেঙে অ’স্ত্র চুরির অভিযোগ, জিডি করেই দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ!

কর্তৃক ajkermeherpur
17 ভিউজ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

গত ১৮ অক্টোবর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের কুরিয়ার সেকশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার ১০ দিনের মাথায় বিমানবন্দর থানায় জিডি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। যেখানে উল্লেখ করা হয় এক নম্বর ওয়্যার হাউজের স্ট্রং ভল্টের তালা ভাঙা হয়েছে।এর আগে গত ২৪ অক্টোবর বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে ভল্টটি সিলগালা করা হয়। ২৮ অক্টোবর সকালে সেই ভল্ট পাওয়া যায় শিকল ও তালাবিহীন অবস্থায়। জিডি দায়েরের একদিন পর আবার নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ভল্টে থাকা অস্ত্র বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করে বিমান কর্তৃপক্ষ।

তালা ভাঙা ঘটনায় বিমান কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত শুধু থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে। কিন্তু ভল্টের ভেতরে থাকা মালামাল ঠিক আছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কেন এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি, সেটাও বোঝা যাচ্ছে না।

মূলত বিমান কর্তৃপক্ষ ডিজিতে মালামাল নিখোঁজ হওয়ার কোনো বিষয় উল্লেখ করেনি। তবে সময় সংবাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে কার্গো সেকশনে আসা কয়েকটি এয়ারওয়ে বিল ঘেঁটে দেখা গেছে, সেই সময় বিদেশ থেকে একটি প্রতিষ্ঠান বেশ কিছু অস্ত্র আমদানি করেছিল। সেই চালানে ছিল একটি শর্টগান, কয়েকটি পিস্তল, রাইফেল এবং বুলেট। সেই প্রতিষ্ঠানের মালিকের অভিযোগের প্রেক্ষিতেই সামনে আসে অস্ত্র হারানোর বিষয়টি।এম/এস. গানম্যাক্স কো. ঢাকার অস্ত্র ব্যবসায়ী মো. ফয়সাল কবির বলেন, ‘তাদের সঙ্গে প্রতিদিনই কথা বলতেছি। শুধু ৫০টি পিস্তলের বিষয়ে বিমান কনফার্ম করেছে। বাকিগুলো মালামাল তারা পায়নি এবং চুরি হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এখানে কাস্টমস ও বিমানের লোকজন জড়িত।’

একই রকম ভোগান্তিতে পরেছেন আরও একটি অস্ত্র আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। সিএন্ডএফ এজেন্ট সেলিম রেজা বলেন, বিমানবন্দরে আগুন লাগেনি। এটি পরিকল্পিত।

এমন প্রেক্ষাপটে আলোচনায় আসে বিমানবন্দরের সুরক্ষিত ভল্ট। গত ২৪ অক্টোবর যে ভল্টটি সিলগালা করা হয়, তার পরদিন ২৫ অক্টোবর বিমান কর্তৃপক্ষ বেবিচক ও মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানায়-ভল্টের মালামাল অন্যত্র স্থানান্তর বা কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করার জন্য। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, চিঠি পাঠানোর পরও সেই সিলগালা করা ভল্ট ভেঙে অস্ত্র লুট হয়েছে। কেন এবং কীভাবে এই ঘটনা ঘটল-সেই প্রশ্নের উত্তর নেই বিমান কর্তৃপক্ষের কাছেও।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলাম বলেন, ‘আমরা এটি জানি না, বলতে পারব না ওখানে কি ছিল। কারণ সেটি একটি কনফিডেনশিয়াল জায়গা। কি চুরি হয়েছে, তা তদন্ত কমিটির রিপোর্টেই জানা যাবে।’

বিমানের চিঠিতে ঘটনাগুলোর একটি সময়ক্রম উল্লেখ করা হয়েছে, যা স্পষ্ট করে যে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে দায়িত্ব বিভাজন ও কার্যকর সমন্বয়ের ঘাটতি ছিল মারাত্মক। তবে বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের পর এর দায় চাপাতে দেয়া যায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে। আর এই দায় চাপানোর খেলায় ঘটে যায় ‍বিমানবন্দরে সুরক্ষিত ভল্ট থেকে অস্ত্র চুরির মতো নজিরবিহীন ঘটনা। এত বড়ো দুইটি ঘটনার পরও সমন্বয় না করে উল্টো চলছে দায় চাপানোর প্রতিযোগিতা।

০ মন্তব্য

You may also like

মতামত দিন