দামুড়হুদা প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান:
দামুড়হুদা উপজেলায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মোট ৬২ জন গৃহহীন ও ভূমিহীনের মাঝে ২ শতক করে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয় এবং গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়। প্রাণের টানে এসব গৃহ নিয়মিত পরিদর্শনে চলে যাই আমরা। সার্বক্ষণিক নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার এবং পিআইও ।
সরেজমিন পরিদর্শনে কিছু বিষয় সামনে চলে আসে। যেমনঃ
কিছু ঘরে উপকারভোগী একদমই বরাদ্দকৃত গৃহে বসবাস করছেন না, কিন্তুু দখল ছাড়ছেন না।
কিছু ঘরে উপকারভোগীগণ অনিয়মিত বসবাস করছেন। ফলে উক্ত ঘরসমূহ বদ্ধ অবস্হায় এবং দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্হায় থাকার কারণে ভবিষ্যতে ঘরগুলি ক্ষতিগ্রস্হ হওয়ার আশংকা রয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি), সুদীপ্ত কুমার সিংহ কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দ্রুততার সাথে খালি ঘরসমূহ নতুন উপকারভোগীর মাঝে বন্দোবস্ত প্রদানের ব্যবস্হা গ্রহণের বিষয়ে।
রুদ্রনগরের একটি বাড়ির অপজিটের মালিক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় বাড়িটিতে বৃষ্টির পানি জমে উক্ত পরিবার অত্যন্ত কষ্টে দিনাতিপাত করছিলেন। পানি নিষ্কাশনের জন্য তাৎক্ষণিক স্হায়ী ড্রেনেজ সিস্টেম তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে গত সপ্তাহে।
হাউলী রেলগেটে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে পুকুরের পাশে, সবুজ প্রকৃতির মাঝে উপকারভোগীগণ বসবাস করছে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে কিছু অসাধু ব্যক্তি মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ায় পুকুরের পাশে একটি ঘর নাজুক অবস্হায় আছে। তাৎক্ষণিক প্যালাসাইডিং, গাইড ওয়াল, মাটিভরাট এর কার্যক্রম চলছে। এবিষয়ে প্রাক্কলন প্রস্তুতপূর্বক সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে বৃহৎ পরিসরে উন্নয়ন কার্যক্রম চলবে। ভবিষ্যতে যেন কোন ব্যক্তি পুনরায় মাটি না কাটে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মেম্বার এবং ইউপি চেয়ারম্যানকে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে এখানে তৈরী করে দেওয়া হয়েছে ইটের তৈরী কানেক্টিং রোড।
তবে অত্যন্ত ভালো লাগার বিষয় হলো যারা নিয়মিত বসবাস করছেন তারা অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা যাওয়ার সাথে সাথে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা, ভালোবাসা মিশ্রিত হাসি দেখলে মনটা জুড়িয়ে যায়। মনে হয় এই ঘরগুলি নির্মাণে আমাদের কঠিন শ্রম আর চেষ্টা শতভাগ সার্থক হয়েছে।
বুকের মধ্যে টান লাগে যখন আমার বদলী অর্ডারের কথা শুনে কোন উপকারভোগী ছুটে এসে বলে ” মা তোমার মোবাইল নাম্বারটা লিখে দাও আমাকে।” আমি বলি পরের ইউএনও আসলে তার সাথে কথা বলবেন, সব সমস্যা সে সমাধান করে দিবে। কিন্তু, সেই বৃদ্ধার সরল স্বীকারোক্তি আমার পারসোনাল নাম্বারই তার চায়, সময় অসময়ে সে আমাকে ফোন দিবে যখন আমি এখানে থাকবো না। তাদের ভালোবাসা মাপতে গিয়ে কখন যেন চোখের কোণ ভিজে ওঠে। মনে হয় ধন্য হলুম, ধন্য হলুম।
পরম করুণাময় আল্লাহর অশেষ রহমত বর্ষিত হোক সকলের ওপর। সকল অসহায় মানুষগুলো ভালো থাকুক। বেঁচে থাকুক তাদের ভালোবাসা। সার্থক হোক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন।