বারাদি প্রতিনিধি:
মেহেরপুর সদরের বারাদিতে গত কয়েক দিনের তীব্র তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে বোরো চাষ কার্যক্রম। অত্র অঞ্চলের কিছু কিছু এলাকায় রোপন কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও ফেটে যাচ্ছে ফসলের মাঠ। প্রখর রোদে ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছে কৃষক। বারাদি অঞ্চলে বেশিরভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। ফসলের মাঠের পরিস্থিতি দেখে হতাশায় ভেঙে পড়েছেন সাধারণ কৃষক। বোরো ধান রোপন কার্যক্রম কিছুটা বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল।
কিন্তু গত এক মাসের বেশি সময় ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। তীব্র তাপদাহে বোরো রোপনের জন্য প্রতিকূল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও বোরো ধান রোপণ করা গেলেও ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে প্রচন্ড তাপদাহ খরা অব্যাহত থাকায় উঁচু জমিসহ উচু নিচু জমি গুলোর পানি শুকিয়ে জমি ফেটে যাচ্ছে। এতে বোরো ধান রোপন করে চরম বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। অত্র অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এক মাস পূর্বে যেসব জমিতে পানি ছিল সেসব জমিতেও এখন পানির অভাবে ফাটল দেখা দিয়েছে।
কয়েকদিনের প্রখর রোদে মাটি শুকিয়ে ফেটে গেছে। রোপনকৃত ধানের গাছ গুলো পানির অভাবে বিবর্ণ হয়ে মারে যাচ্ছে। এমন খরার কারণে সেচ পাম্পের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে কৃষকদের। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়াই বাড়বে ধানের উৎপাদন ব্যয়। এ ব্যাপারে মেহেরপুর বীজ উৎপাদন খামার বিএডিসি বারাদী খামারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কেএম মনিরুজ্জামান বলেন, চলতি মৌসুমে অত্র খামারে বিভিন্ন জাতের বোরো ধান বীজ ফসল ১১৯ একর, বোরো হাইব্রিড ধান বীজ ফসল ৯৯ একর ও হাইব্রিড ভুট্টা ৫ একর সর্বমোট ২২৩ একর ফসল মাঠের দন্ডায়মান। ফসলের অবস্থা খুব ভালো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কাঙ্খিত মাত্রায় ফলন অর্জিত হবে বলে আশা করা যায়। বর্তমানে খামার এলাকা সহ আশেপাশের এলাকায় তীব্র তাপদাহ বিরাজ করছে। প্রতিনিয়ত সেচ দেয়ার পরেও মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে। মাঠের দণ্ডায়মান বোরো ধান বীজ ফসল বর্তমানে পরাগায়ন পর্যায়ে থাকায় পানির অভাবে পরাগায়ন ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, প্রচন্ড তাপদাহের কারণে অতিরিক্ত কয়েকটি স্যালো টিউবয়েল স্থাপন করে নিয়মিত সেচ কার্যক্রম চলমান রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও দিন দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান ক্ষেতের মাঠে পানি রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
এমতাবস্থায় পরাগায়ণ ব্যাহত হচ্ছে এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি হচ্ছে ফলে ফলন কিছুটা কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো ফসলে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বর্তমান উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে খামারটি লাভজনক অবস্থায় আছে বলে তিনি জানান।