নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুজিবনগরে জমির দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৬ জন আহত । সোমবার বিকেলে আনন্দবাস গ্রামের আলতাচরা বন্দের মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, আনন্দবাস গ্রামের মৃত: আহমেদ আলীর ছেলে আলাউদ্দীন এবং ত্বক্কেল খাঁ দুই ছেলে মুনতাজ আলী ও হায়দার আলী এবং জয়পুর গ্রামের মৃত: কদম আলীর ছেলে আনছার আলী, মৃত : মিরাজ আলীর ছেলে আক্কাস আলী, মৃত : দিদার বক্সের ছেলে নোয়াজ্জেম। এদের মধ্যে আনছার আলীর হাতের আঙ্গুলের শিরা কেটে যাওয়ায় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
জানা গেছে, সোমবার বিকেলে আনন্দবাস গ্রামের আলতাচরা বন্দের মাঠে এ জমিতে আলাউদ্দীনসহ তিন চার জন ধান রোপনের জন্য জমি প্রস্তুতি করছিল। এমন সময় জয়পুর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ঐ জমি দখল নেওয়ার জন্য যায়। এই বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় পক্ষের ছয় জন গুরুতর আহত হয়।
আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এ বিষয়ে আনন্দবাস গ্রামের আলাউদ্দিন বলেন, ১৯৮২ সালে আবুবক্কর খা,তোয়াক্কেল আলী খা এবং নাজিমুদ্দীন খা জয়পুর গ্রামের ইলিয়াস হোসেন এর কাছ থেকে রেকর্ড মূলে ৪০ শতক জমি ক্রয় করেন। সেই থেকে এই জমি দীর্ঘদিন ধরে আমরা চাষাবাদ করে আসছি। মেহেরপুর কোর্টে এ বিষয়ে মামলা আছে।
গত কয়েকদিন আগে জয়পুর এবতেদায়ি মাদ্রাসা কর্তিপক্ষ জমি মাদ্রাসার দাবি করে জোর পূর্বক দখল করে। এ বিষয়ে আমরা মুজিবনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জানায় গতকাল রবিবার বিকেলে থানায় দুই পক্ষকে ডাক করে মীমাংসার জন্য বসে কিন্তু উভয় পক্ষ কোন সিদ্ধন্তে না আসায় মীমাংসা সম্ভব হয়নি। তিনি আরো জানান, আমরা মূর্খ মানুষ জমির কাগজ সম্পর্কে কম বুঝি আদালতে মামলা আছে আদালত যদি আমাদের কাগজ সঠিক না বলে আমরা জমি ছেড়ে দিব এই বলে আমরা চলে আসি। আজ আমরা জমিতে ধান রোপনের জন্য চাষ করছিলাম
এ সময় বিকালের দিকে মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ ৩০/৪০ জন লোক বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র ও লাঠি সড়কি নিয়ে জমি দখলে আসে। এ সময় আমি তাদেরকে বললাম, আপনাদের কাগজপত্র যদি ঠিক থাকে এবং আমার কাগজটা যদি ভুল প্রমাণিত করতে পারেন তাহলে আমরা জমি ছেড়ে দেব। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে মারধর শুরু করে মাথায় আঘাত করে আমি মাটিতে পড়ে গেলে আমাকে রক্ষার জন্য অন্যরা এগিয়ে আসলে তাদের কেও লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রদিয়ে আঘাত করে। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায় লোকজন আমাদের উদ্ধার করে মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। মুজিবনগর থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জয়পুর ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুস সামাদ বলেন, জমির কাগজপত্র খাজনা খারিজ সবই মাদ্রাসার নামে কিন্তু জমি চাষ করতে গেলে অপরপক্ষ জোর পূর্বক জমি চাষ করতে বাধাঁ দেয়। গত কয়েকদিন আগে জমির দখল নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছিল এত উভয় পক্ষ মুজিবনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার বিকেলে উভয় পক্ষকে নিয়ে এসআই হেকমত থানায় বসে আমরা সমস্ত কাগজপত্র দেখায় কিন্তু তারা একটি দলিল ছাড়া কিছুই দেখাতে পারেনি। কাগজপত্র না দেখাতে পারার কারণে সেখানে প্রতীয়মান হয় যে জমিটা আসলেই মাদ্রাসার তখন এস আই হেকমত তাদেরকে বলে যে জমি যেহেতু একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের এবং কাগজ পত্র তাদের সেহেতু জমিটা আপনারা ছেড়ে দেন। ওই জমি যেহেতু মাদ্রাসার সমস্ত কাগজপত্র আছে সেহেতু জমিতে আপনারা আর যাবেন না।
সোমবার বিকেলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সহ গ্রামবাসী জমিতে ধান লাগানোর জন্য যাই এ সময় অপরপক্ষ লাঠি সোটা ও ধারালে অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপরে হামলা করে এ সময় আমাদের পাঁচ জন আহত হয় আমরা তাদেরকে উদ্ধার করে মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে আসে এ বিষয়ে মুজিবনগর থানায় একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
মুজিবনগর থানা অফিসার ইনচার্জ মেহেদী রাসেল জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে এই বিষয়ের উপর গতকাল থানাতে বসা হয়েছিল। কিন্তু উভয় পক্ষ কোন সমঝোতায় না আসায় এবং কোর্টে এ বিষয়ে মামলা থাকায় দুই পক্ষকে বলা হয় যে জমি নিয়ে কোন ঝামেলা না করার জন্য। আজকে দখল দিয়ে মারামারি হয়েছে শুনেছি এবং কয়েকজন আহত হয়েছে এটাও শুনেছি তবে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।